মাছের খাবার যখন মানুষ
প্রতিক্ষণ ডেস্ক:
১৯৮১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ঘটনা। আমাজনের খুব কাছ দিয়েই ব্রাজিলের একটি স্টিমার ৫৩০ জন যাত্রী ও ২০০ টন মালামাল নিয়ে যাচ্ছিল। স্টিমারটি হঠাত্ একটি বন্দরের কাছে এসে ২৬০ ফুট গভীর পানিতে উল্টে যায়। এতে যাত্রীদের অনেকেই আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হয়। আর এই রক্তের গন্ধ পেতেই সেখানে হাজির হয়ে যায় পিরানহা মাছের দল। সেই দুর্ঘটনা থেকে কেবল ১৮২ জন জীবন নিয়ে ফিরতে পেরেছিল। আর বাকি ৩৮৪ জন পিরানহার শিকার হয়।
আক্রমণাত্মক ও হিংস্র মাছ হিসেবে পিরানহার পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। এদের গায়ের রঙ কালচে ধূসর। পেটের দিকটা লালচে আর মাথা বেশ বড় ও প্রশস্থ । পিরানহা ওজনে ৩.৫ কেজি পর্যন্ত এবং লম্বায় প্রায় ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে । এদের মুখের উভয় চোয়ালে তীক্ষè দাঁত রয়েছে, এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৩৩ সেন্টিমিটার। চোখ বেশ বড় হওয়ায় শিকার এদের চোখকে ফাঁকি দিতে পারে না।
শক্তিশালী নিম্ন চোয়াল ছাড়াও উন্নত ও পুরু মাংসপেশী এবং পার্শ্বীয়ভাবে চাপা দেহ পিরানহাকে করে তুলেছে আরোও বেশি হিংস্র। এদের ক্ষিপ্রগতির কারণে বিজ্ঞানীরা এই মাছকে ‘রাক্ষুসে মাছ’ বলে অভিহিত করেছেন।
চিংড়ি, জলজ পতঙ্গ ও মানুষ খেকো পিরানহা মাছের দেখা মেলে দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকায়। এদের অনেক প্রজাতি স্বাদু পানিতে ও কিছু প্রজাতি লোনা পানিতে বসবাস করে। বড় ও অগভীর জলাশয়ে বেশি দেখা গেলেও অ্যাকুয়ারিয়ামের ছোট্ট পরিবেশেও এরা স্বাচ্ছন্দে মানিয়ে নিতে পারে। অনুকূল পরিবেশে পিরানহা ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
জলের ভেতরে কোথাও রঙের সামান্য গন্ধ পেলেই পিরানহা ঝাঁক বেঁধে সেখানে উপস্থিত হয়। আর কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব পেলে নিমিষেই তা খেয়ে ফেলে।
জলের আতঙ্ক পিরানহা এতোটাই ভয়ংকর যে, এরইমধ্যে হলিউডে পিরানহা মাছকে নিয়ে চলচ্চিত্র পর্যন্ত বানানো হয়েছে।
হিংস্র পিরানহা সম্পর্কে অবাক করা একটি তথ্য হচ্ছে- এটি একবারেই ভীতু একটি মাছ। আক্রমণের জন্য নয় বরং আত্মরক্ষার জন্য পিরানহা দল বেঁধে থাকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এস.আর.এস